Skip to main content
 

রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতের ইতিহাস ও ঐতির্য্য

বর্তমানে রাজবাড়ী জেলা জজ আদালত ভবন যেখানে অবস্থিত তা ঠিক একই জায়গায় অবস্থিত ছিল না।পূর্বেই এই আদালত রাজবাড়ী সদর উপজেলা এবং  গোয়ালন্দ উপজেলায় মাঝামাঝিন ছোট ভাকলা নামক স্থানে গোয়ালন্দ মুন্সেফি আদালত নামে এবং মূল রাজবাড়ী বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার অংশ হিসাবে সরকারী নথিপত্রে অন্তভূক্ত ছিল। মূলত ১৮৯৮ সালে উক্ত মুন্সেফি আদালত বর্তমান জেলা জজ আদালতের জায়গায় গোয়ালন্দ মুন্সেফি আদালত নামে স্থাপিত হয় এবং বর্তমান জেলা জজ মহোদয়ের বাংলোর পিছনে মুন্সেফ জজের চেম্বার হিসেবে ছিল। তখন রাজবাড়ী নামে পৃথক কোন জেলা ছিল না। মূলত গোয়ালন্দ সাব-ডিভিশন হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমান জজ কোর্ট্ জামে মসজিদের পিছনে একতলা ভবন বিশিষ্ট মুক্তার বার এবং মুন্সেফি আদালতের দক্ষিন পূর্ব কোনে সাব-রেজিষ্টার অফিস অবস্থিত ছিল।

 

এখানে অবসর জেলা জজ জনাব দীনেশ চন্দ্র দেবনাথ বিজ্ঞ মুনসেফ হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালে বর্তমান জেলা জজ মহোদয়ের বাংলোর পাশে অবস্থিত পরিত্যাক্ত তৎকালিন মুন্সেফ জজ কোয়ার্টারে তার কন্যা আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ জন্ম গ্রহন করেন।

 

রাজবাড়ী বারের বিজ্ঞ এ্যাডভোকেট জনাব আব্দুল ওয়াজেদ চৌধুরী ১৯৬৮ সালে মুন্সেফ হিসেবে কুস্য়াতে যোগদান করেন এবং তার কন্যা সালমা রুমা চৌধুরী বর্তমান রাজবাড়ী সংরক্ষিত মহিলা আসনে পার্লামেন্ট মেম্বার আবার রাজবাড়ী বারের বিজ্ঞ এ্যাডভোটেক আহমেদ আলী মৃধা তৎকালে এম.এল. ছিলেন।

 

এছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজবাড়ী বারের বিজ্ঞ আইনজীবী জনাব কালীশঙ্কর মত্র স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম আইনজীবী হিসেবে পাকহানাদারদের হাতে শাহাদৎ বরণ করেন এবং বর্তমান রাজবাড়ী জেলা বারে প্রাকটিসরত তিন জন বিজ্ঞ আইনজীবী জনাব শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, জনাব গণেশ নারায়ন চৌধুরী এবং জনাব ওমর আলী গণ সরাসরি সম্মুখ যোদ্ধা হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

 

বর্তমান রেকর্ড রুমের পূর্বে একটি উইটনেস ভবন ছিল এবং রেকর্ড রুমের জায়গায় দুইটি টিনের ভবনে নথিপত্র সংরক্ষিত থাকত এবং ভবন রেকর্ড রুম হিসেবে পরিচালিত হতো। কথিত আছে রেকর্ড রুমের মধ্যে প্রচুর গোখরা সাপ বাসা বেধেছিল।

 

তখন কোর্টে যাওয়া আসার মত ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পদ্মা নদীর সাথে কোর্ট চত্তর পর্যন্ত সরাসরি একটি সংযোগ খাল ব্যবহার করে পানি পথে মানুষ নৌকায় যাতায়াত করতেন। পরবর্তীতে ফরিদপুর হতে বিভাজন হয়ে রাজবাড়ী জেলা সৃজন হলে এবং তৎপরবর্তী উপজেলা কোর্ট সৃষ্টি হওয়ার পর আজকের এই আধুনিক বিল্ডিং সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সহকারে বর্তমান বিচার ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। বর্তমান জেলা জজ আদালতে কর্মরত কয়েক জন বিজ্ঞ জেলা জজ পরবর্তীতে মহামান্য উচ্চ আদালতে বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন।

 

বর্তমান জেলা জজ মহোদয়ের বাংলোর পাশে যে পুকুর অবস্থিত তা বহু পূর্ব হতেই ছিল। এখনও কালের সাক্ষী হিসেবে পাড় ঘেষে পাঁচটি বিশাল আকার রেইনট্রি দন্ডায়মান রয়েছে।

 

এই ছিল সংক্ষেপে রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতের ইতিহাস ঐতির্য্য।